আজঃ বুধবার | ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৬ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি
শিরোনাম

ইতিহাসের নিরব সাক্ষী জিগাতলা পাখিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

কাফি পারভেজ:
বকশিগঞ্জের পাখিমারা গ্রামে ১৯৪৩ সালে এলাকার কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীর কথা চিন্তা করে বর্তমান জিগাতলা পাখিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয়। ঐতিহাসিক এ পথ চলার পেছনের ইতিহাস আরো পুরোনো। প্রায় উনআশি বছরের প্রাচীন এই বিদ্যালয়টিতে পড়ালেখা করেছেন অবহেলিত এই এলাকার প্রায় দশটি গ্রামের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এই বিদ্যালয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে মহান ভাষা আন্দোলনেও। বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাকালীন সময়েও রয়েছে নানা ইতিহাস। দীর্ঘ উনআশি বছর পর জেলার ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যালয়ের ভূমি জটিলতার খবরে স্থানীয়দের মনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিদ্যালয়টির ইতিহাস ঘেটে জানা গেছে, বকশিগঞ্জের পাখিমারা গ্রামের সরকার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা এবং শাসনকর্তা জয়েন উদ্দিন সরকার ওরফে জনি সরকারের সুবিস্তৃত বংশধর বিদ্যোৎসাহী সাত ছেলে প্রয়াত জহর উদ্দিন সরকার, হাফেজ উদ্দিন সরকার, রিয়াজ উদ্দিন সরকার, কালুমুদ্দিন সরকার, মঈন উদ্দিন মিয়া, হোসেন উদ্দিন সরকার ও প্রয়াত জালাল উদ্দিন সরকারসহ জিগাতলা গ্রামের প্রয়াত জরিপ উদ্দিন মন্ডল, পাখিমারা গ্রামের প্রয়াত তজিমুল খন্দকার, মোজাম্মল হক খন্দকারসহ তৎকালীন বকশিগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দানবীর নঈম মিয়া শিশু শিক্ষার্থীর কথা চিন্তা করে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। প্রথমে বকশিগঞ্জের নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নের জিগাতলা গ্রামে বিদ্যালয়টি স্থাপনের মত প্রকাশ করেন জিগাতলা গ্রামের প্রয়াত দানবীর জলিল মিয়া। পরবর্তী সময়ে সকলের সিদ্ধান্তে এক বৈঠকে বকশিগঞ্জ ইউনিয়নেই বিদ্যালয়টি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। পরে জিগাতলা গ্রামের প্রয়াত দানবীর জলিল মিয়া বিদ্যালয়টির নামের আগে জিগাতলা নামটি রাখার প্রস্তাব করেন। ওই বৈঠকে সকলের সিদ্ধান্তক্রমে জিগাতলা পাখিমারা প্রাথমিক বিদ্যালয় নামকরণ করা হয়। নামকরণ শেষে বিভিন্ন এলাকার বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিদের সাধ্যনুযায়ী তাঁদের মেধা, শ্রম ও অর্থ দান করে প্রতিষ্ঠা করেন ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পাখিমারা চৌরাস্তা মোড় এলাকার কামালপুর-জামালপুর মহাসড়কের পশ্চিমে (চরকাউরিয়া মৌজার সিএস দাগ নং ১২৬১, আরওআর দাগ নং-১২৬১ এবং বিআরএস দাগ নং-৩০৭২) দানকৃত ৪৯ শতাংশ ভূমিতে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টির জন্য প্রথমে একটি টিনশেড ঘর তুলে শিশু শিক্ষার কার্যক্রম শুরু করেন। ১৯৫৭ সালে প্রচন্ড ঝড়ে বিদ্যালয়টির ঘর লন্ডভন্ড হয়ে যায়। সে সময় বিদ্যালয়টির শিশু শিক্ষার কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ থাকে। পরে বিদ্যালয়টির পাশেই প্রয়াত দানবীর মোজাম্মেল হক খন্দকারের বাড়ির একটি ঘরে বিদ্যালয়টির শিশুশিক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়। সেখানে কোমলমাতি শিশু শিক্ষার্থীদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় কিছুদিন পর পাখিমারা সরকারবাড়ির দানবীর প্রয়াত রিয়াজ উদ্দিন সরকারের কাচারী ঘরে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ফের চালু হয়। ঝড়ে লন্ডভন্ড বিদ্যালয়টি মেরামতের জন্য এলাকার দানবীর ব্যক্তিদের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে একটি টিনশেড ঘর উত্তোলন করা হয়। প্রায় উনআশি বছরের পুরনো এই বিদ্যালয়টিতে পড়ালেখা করেছেন অবহেলিত এই এলাকার হাজার হাজার শিক্ষার্থী। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এই বিদ্যালয়ের টিনশেড ঘরে মুক্তিবাহিনীর অনেক সদস্য রাতে আশ্রয় নিতেন। ৫২ সালে ভাষা আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই বিদ্যালয়। এলাকার অনেক মুরুব্বিরা জানিয়েছেন, রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে এই বিদ্যালয়ের তৎকালীন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। তারমধ্যে অন্যতম ছিলেন প্রয়াত অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন এমসিএ।
এ ছাড়াও এই বিদ্যালয় ইতিহাসের নিরব সাক্ষী। উনসত্তুরের আয়ুবশাহী বিরোধী গণঅভ্যুত্থানকালে এই বিদ্যালয় মাঠে ঈদের জামাতে কালো পতাকা উড়িয়ে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে নিন্দাবাদ ও ঘৃণা জানিয়ে ছিলেন খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত অধ্যাপক আবু নেওয়াজ মো. রশিদুজ্জামান। স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়েছিল এই বিদ্যালয় মাঠেই ।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ ৭৯ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টি ১৯৭৩ সালে প্রথম ধাপে সরকারিভাবে নিবন্ধনভুক্ত হয়। যার বিদ্যালয় কোড নং ৯১৩০১০৪০১৪৩। বর্তমানে ঈদগাঁ মাঠ সংলগ্ন পশ্চিমে দানকৃত ভূমিতে জিগাতলা পাখিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এই বিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষক কর্মরত আছেন। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২১২ জন। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় টিনশেড ঘর থেকে পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে সরকারি অর্থায়নে একতলা পাকা ভবন নির্মিত হয়। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই রয়েছে দ্বি-তল বিশিষ্ট একটি ফ্লাড সেন্টার কাম ক্লাসরুম। এর পূর্বপাশেই নির্মাণ করা হয়েছে শহীদ মিনার। সম্প্রতি বিদ্যালয়টির চারতলা বিশিষ্ট ভবনের বর্তমান ২ হাজার ২০০ বর্গফুটের দ্বি-তল ভবন নির্মাণ প্রকল্প গৃহিত হয়েছে। বিদ্যালয়ের পুরাতন একতলা ভবনটির স্থানে এই দ্বি-তল ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে একতলা ভবনটি ভেঙে নভেম্বর-২০২২ ইং থেকে দ্বি-তল ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কাজ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয়ের ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা সৃষ্টি করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। বিদ্যালয়টির ভূমির কথিত মালিকানা দাবি করে তারা ভূমি বেদখল ও বিদ্যালয়টি উচ্ছেদের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এ ছাড়াও ওই স্বার্থান্বেষী মহল বিদ্যালয়টির পরিচালনা পরিষদের সকল সদস্য এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সাত জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও দায়ের করেছেন।
স্বার্থান্বেষী মহলের প্রাচীন বিদ্যালয়টির দানকৃত ভূমির মালিকানা দাবি করার বিষয়টি রহস্যজনক মনে করছেন অনেকেই। বিদ্যালয়ের ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা এবং বিদ্যালয় উচ্ছেদের পাঁয়তারার খবরে এলাকার লোকজন বিস্মিত, হতবাক, মর্মাহত ও স্তম্ভিত হয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগী লোকজনের মাঝে। মামলা মোকদ্দমার কারণে বিদ্যালয়টির উন্নয়ন কাজ ব্যাহতসহ কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে নতুন ভবন নির্মাণ নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এতে স্থানীয় শিক্ষাবিদ, সাধারণ মানুষ, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সচেতন নাগরিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠেছে।
জানা গেছে, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা এই বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী তাদের পরবর্তী শিক্ষাজীবনে ভালো ফলাফল অর্জন করে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সুনামের সাথে গ্রামে এবং দেশ-বিদেশে অনেক অবদান রাখেন এবং রেখে যাচ্ছেন। বিভিন্ন শ্রেণি পেশায় বহু সংখ্যক স্বনামধন্য ব্যক্তি এই বিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী ছিলেন। দেশ বিদেশে প্রতিষ্ঠিত বহু মানুষের শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত রয়েছে এই বিদ্যালয়কে ঘিরে। তাদের অনেকেই এই বিদ্যালয়ের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছেন। বিদ্যালয়টির সাবেক প্রধান শিক্ষক প্রয়াত শরিফ উদ্দিন, প্রয়াত সুধির মোদক, প্রয়াত খলিলুর রহমান, প্রয়াত মফিজল হক, প্রয়াত হরেন্দ্র নাথ সেন ও প্রয়াত নিবারন চন্দ্রের পরিবারের লোকজনদের কাছ থেকে তাদের সময়কার বিদ্যালয় পরিচালনা ও শিক্ষাকার্যক্রমের অনেক তথ্য জানা যায়। এ ছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকুরিজীবি মো. খায়রুল ইসলাম ওয়াজেদ, সাবেক প্রধান শিক্ষক রমেছা বেগম ও বর্তমান প্রধান শিক্ষক আব্দুল আওয়ালের নিকট বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়।
পাখিমারা গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুলাহের কাফি জানান, ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টির দানকৃত ভূমির মালিকানা দাবি করে ভূমি দখল ও বিদ্যালয়টি উচ্ছেদের পাঁয়তারা চালাচ্ছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগী লোকজনের মাঝে। ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করে বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য মাঠ পর্যয়ে তদন্ত সাপেক্ষে জরুরি উদ্যোগ গ্রহণে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট প্রায় ২১টি দপ্তরে আবেদন করেছেন। বিদ্যালয়টির ভূমি রক্ষা এবং উচ্ছেদের পাঁয়তারা বন্ধ করার জন্য ওই স্বার্থান্বেষী মহল ও ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি জানান।
কথা সাহিত্যিক আতা সরকার বলেন, স্কুলটি বেসরকারি থেকে সরকারি হয়েছে, সম্প্রতি স্কুল সম্প্রসারণের কাজ চলছে। প্রায় ৭৯ বছর আগে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হলেও এ নিয়ে কোনদিন প্রশ্ন বা বিতন্ডা ওঠেনি। এখন পুরনো কাগজ হাজির করে স্কুলের জমি নিয়ে বিতর্ক সুষ্টি দুঃখজনক। আজ স্কুলটির অস্তিত্বই শুধু হুমকির মুখে নয়, এই এলাকার লেখাপড়া, শিক্ষা ব্যবস্থা বিপদাপন্ন। এ অবস্থায় শীঘ্রই এর নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। তিনি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (উৎপাদন) মো. নূর ইসলাম বলেন, ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টির ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা এবং মামলা মোকদ্দমার কারণে বিদ্যালয়টির উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়েছে। এমন খবরে এলাকার সচেতন মহলসহ আমি বিস্মিত ও হতবাক। এই বিদ্যালয়টির সাথে অনেক জ্ঞানী গুণী মানুষের বাল্য কালের স্মৃতি বিজড়িত রয়েছে। ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
কানাডা প্রবাসী অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক শিক্ষাবিদ ড. মতিউল আলম জানান, তিনি এই বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেন। এছাড়াও তাঁর বড় ভাই প্রয়াত অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খাদেমুল ইসলাম, প্রয়াত অধ্যাপক মো. নুরুজ্জামান, প্রয়াত অধ্যাপক ড. একরামুল ইসলাম, বোন অধ্যাপক মমতাজ বেগম এবং প্রয়াত অধ্যাপক আবু নেওয়াজ মো. রশিদুজ্জামান এ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। প্রায় ৮০ বছর পর একটি চালু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেওয়ার পাঁয়তারা সংবাদে তিনিসহ শিক্ষার্থী, অভিবাবক ও এলাকার সচেতন মহল স্তম্ভিত হয়েছেন বলে জানান। বিদ্যালয়ের নামে দানকৃত ভূমি দখলের পাঁয়তারার ক্ষমতার উৎস কোথায় তা খুঁজে বের করতে হবে। তিনি এ সমস্যা নিরসনে শিক্ষা প্রশাসন ও সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মমতাজ বেগম জানান, নারীশিক্ষা ও নারী অগ্রগতি তরান্বিত করতে এবং বিশেষ গুরুত্বারোপ করে নারী শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে আমার বাবা মরহুম মঈন উদ্দিন মিয়া এবং মা মরহুম খাতেমুন নেছা’র নামে পাখিমারা এলাকায় খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। একই এলাকায় প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমিও পড়ালেখা করেছি। জানতে পারলাম বিদ্যালয়টি উচ্ছেদের নীল নকশা তৈরী করেছে একটি মহল। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি। ওই মহলের হীন মানসিকতার পদক্ষেপ বন্ধ করার দাবি জানিয়ে সংশি¬ষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম জানান, ১৯৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এই বিদ্যালয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টি উচ্ছেদের পাঁয়তারা চালাচ্ছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। ওই স্বার্থান্বেষী মহলের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল মমিন জানান, ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টি উচ্ছেদের পাঁয়তারায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে নজর দেয়া হোক এবং সমস্যা সমাধান নিরসনে হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সাবেক আইজিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ১৯৪৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জিগাতলা পাখিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা এবং ধংস করার অপতৎপরতা শুরু হয়েছে জেনে খুবই কষ্ট পেয়েছি। আমার শিক্ষা জীবনের হাতেখড়ি বিদ্যালয়টি যাতে কারো শ্যাণদৃষ্টিতে পড়ে শিক্ষাদান কার্যক্রমে বাধাগ্রস্থ যেন না হয়। এজন্য বিদ্যালয়টি জনগুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে এলাকাবাসীসহ স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ কামনা করছি।

আরও দেখুন

ইসলামপুরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের উদ্বোধন

ইসলামপুর সংবাদদাতা মঙ্গলবার সারাদেশে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । …