আজঃ বৃহস্পতিবার | ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
শিরোনাম

শেরপুর সীমান্তে বেড়েছে চোরাচালান

ছবি: সংগৃহিত

শেরপুর প্রতিনিধি:
শেরপুরের শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী সীমান্তে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারো সক্রিয় হয়ে ওঠেছে চোরাচালানকারীরা। ভারত থেকে উপজেলার গারো পাহাড়ের খারামোরা, তাওয়াকোচা ও হারিয়াকোনা এলাকার সীমান্ত দিয়ে বাড়ছে গরু ও মাদকদ্রব্য পাচার। এতে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সরেজমিন গেলে স্থানীয় লোকজন ও বিজিবির সঙ্গে কথা বলে ওঠে আসে এমন তথ্য।
জানা যায়, শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তঘেষাঁ গ্রামগুলোর পাশে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পোড়াকাশিয়া সীমানা। এখানে সীমানা পিলারের জিরো পয়েন্টে ভারতের কাটাতারের বেড়ার নিচে বিভিন্ন স্থানে রয়েছে গোলাকৃতির কালভার্টের ফাঁক। যেখানে কাঁটাতারের বেড়া শেষ সেখানে খোলা অংশ। কোথাও নদী বা নদীর ওপর ব্রিজ। এসব কালভার্ট, খাল আর ব্রিজের ফাঁকা স্থান ব্যবহার করে চোরাকারবারিরা। বিএসএফ ও বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে পোড়াকাশিয়া থেকে আনছে গরু ও মাদক দ্রব্য। চোরাই পথে আসা এসব গরু বেচাকেনা হচ্ছে স্থানীয় সীমান্ত এলাকা খারামোরা, তাওয়াকোচা ও হারিয়াকোনা গ্রামে।
ওইসব গ্রামের বাসিন্দারা জানান, প্রায় ৩-৪ মাস যাবত ভারতের বিএসএফের চোখ ফাঁকি দিয়ে চোরাই পথে আসছে গরু আর মাদকদ্রব্য। সপ্তাহের শনিবার দিবাগত ভোররাতেই বেশি আসে গরু। এজন্য ওইসব গ্রামে প্রতি শনিবার সন্ধ্যা হতে জড়ো হতে থাকে পাইকাররা। বেচাকেনা হয় সীমান্ত ঘেঁষা ওইসব গ্রামে। এর পর পাহাড়ি পথ বেয়ে নিয়ে আসা হয় কর্ণঝোড়া, বালিজুরি, ভায়াডাঙ্গাসহ বিভিন্ন বাজারে। গরুর সঙ্গে আসছে মাদকদ্রব্য। এসব বিক্রি হয় সিক্রেট। তবে মাদক ব্যবসায়ীদেরও আনাগোনা প্রকাশ্যেই।
এদিকে, খারামোরা গ্রামের তৈয়ব আলী, কালো গাজী, বালিজুরি গ্রামের বিষু আলী, আব্দুল হক, বাচ্চা গেল্লা, আব্দুর রহিম, অফিস পাড়ার নুর নবী, কর্ণঝোড়ার কমল আর বিপ্লব হলো এখানকার চোরাচালানের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ইতিপূর্বে বিপ্লব ভারতের কাটাতারের বেড়া কাটতে গিয়ে বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে দীর্ঘদিন জেলা হাজতে ছিল। দেশেও একাধিকবার পুলিশ ও ডিবির জালে ধরা পড়ে। তবে, শুধু বিপ্লবই না। এদের মধ্যে অনেকেই মাদক ও গরুসহ একাধিকবার পুলিশ ও বিজিবির হাতে আটক হয়েছিল। জেলও খেটেছে। এ ব্যাপারে কথা হয় বিপ্লবের সাথে। তিনি বলেন, এখানে অনেকেই ভারতের চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা শুধু আমার নাম বলে। আমি এখন আর বর্ডারে যাইনা। এ ব্যাপারে অন্যদের সঙ্গে ফোনে বা সরাসরি যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
আরেক সূত্রে জানা যায়, সীমান্তের চোরাচালানের নিয়ন্ত্রণ করছে খারামোরা বর্ডারের আফছার আলী ও হারিকোনা বর্ডারে হাইদর আলী। ফলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সীমান্তে প্রবেশ করলেই মোবাইল ফোনে সতর্ক করে দেয়। ফলে নির্ভয়েই ব্যবসা করছেন চোরাচালানকারীরা। বিনিময়ে এ দুজন তাদের কাছ থেকে গরু প্রতি নেয় দুই শ থেকে তিন শ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গরু চোরাচালানকারী জানান, হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে টাকা পাঠানো হয়। সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় গরু ও মাদকদ্রব্য। এতে রয়েছে জীবনের ঝুঁকি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মামলা মোকদ্দমায় অনেকে এলাকা ছাড়া। তবুও থেমে নেই গরু চোরাচালান আর মাদক ব্যবসা।
খারামোরা গ্রামের বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য জহুরুল হক জানান, এখানে স্থানীয় কয়েকজন জড়িত আছে। এছাড়া ভায়াডাঙ্গা, বালিজুরি, অফিসপাড়া ও কর্ণঝোড়া থেকে অনেকে আসে। তাদেরকে নিষেধ করলেও তারা মানে না।
তাওয়াকোচা বিজিবি ক্যাম্প ইনচার্জ নায়েব সুবেদার মো. আব্দুল হাই জানান, এটি পাহাড়ি এলাকা। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো না। তবুও আমরা প্রতিদিন অভিযান চালাচ্ছি। প্রতিরাতেই টহল চলছে। সোমবার অভিযান চালিয়ে ২টি গরু আটক করা হয়েছে। এসব গরু নিলামে বিক্রি করা হবে। কেউ যদি গরু চোরাচালান বা মাদকের সন্ধান দিতে পারে তাহলে আমরা তাদেরকে আটক করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।

আরও দেখুন

ইসলামপুরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের উদ্বোধন

ইসলামপুর সংবাদদাতা মঙ্গলবার সারাদেশে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । …