আজঃ বৃহস্পতিবার | ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
শিরোনাম

আধুনিকতা শুধু পোশাকেই নয়, মননে ও জ্ঞানেও

তানজিলা সুলতানা:
কোন বিতর্কিত বিষয় নিয়ে লেখালেখি আমার খুবই অপছন্দের। বাধ্য হয়েই আজ কিছু লিখছি। শালীনতার সৌন্দর্য সব চেয়ে বড় একটা সৌন্দর্য। নারী-পুরুষ উভয়কেই শালীনতা বজায় রেখে চলার নির্দেশ আছে।
আমার জন্ম গ্রামে। গ্রামেই বড় হয়েছি। আমার নানীকে দেখিনি। দাদীকে দেখেছি। সব সময় ঘোমটা দিয়ে থাকতেন। আমার মা, খালা, চাচী, ফুফুরাও তেমনি সব সময় ঘোমটা দিয়ে থাকেন। আমার আম্মা যখন গ্রামে থাকতেন বাড়ীর সব কাজ নিজ হাতে করতেন। পাড়া প্রতিবেশীরা কখনো আম্মার চেহারা পুরোপুরি দেখত না। গ্রামে যারা থাকে তারাও ব্লাউজ ছাড়া শাড়ী পরে না। অনেকের দাদী, নানী বা প্রতিবেশী ব্লাউজ ছাড়া আটপৌরে শাড়ী পড়তে পারেন। কিন্তু তারা কখনো লোক সমাগমে এমনভাবে বের হতেন না। তখনকার দিনে দাদী, নানীদের বাল্য বিয়ে হতো। ১০-১৫ জন বাচ্চাও হতো। আমার নানীর ১১ জন সন্তান ছিলো। আমার কলেজের এক বান্ধবীরা ১৫ জন ভাই-বোন ছিলো।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।সেখানকার কোন শিক্ষার্থী যদি এমন অশালীন পোশাক পরিধান করে তাহলে অন্যরা কি করবে। এমন উশৃংখল পোশাক পরিধান করা কি আমাদের সাজে,,,? যেই আধুনিকতা আমাদের উশৃংখলতা শেখায় সেই আধুনিকতার দরকার নেই আমাদের। যে মেয়েটি ব্লাউজ ছাড়া শাড়ী পরে অর্ধেক শরীর বের করে অর্ধ উলঙ্গ হয়ে নারী অধিকারের কথা বলতে এসেছে। এতে নারীর অধিকার তো দূরের কথা নারীদের আরো অমর্যাদা করা হয়েছে। আজ এই মেয়েটির ভুল মেসেজের জন্য আমাদের পরবর্তী জেনারেশন ভুল পথে পা বাঁড়াবে আমাদের জানতে হবে কোন পোশাক পরলে শালিন লাগবে আর কোন কাপড় পরলে অশালীন লাগবে। আর এটুকু বোধ যদি না থাকে তাহলে পাগল আর সুস্থ মানুষের মাঝে পার্থক্য কোথায়? হায় রে,,,, দুনিয়া। আপনি কি পোশাক পড়ে বের হবেন তা আপনার নিজস্ব ব্যাপার। কিন্তু তারপরেও কিছু কথা থেকে যায়। বিয়ের পোশাক পড়ে কিন্তু কেউ ঘুরতে যায় না। রাতে ঘুমানোর সময় বা জিমে আমরা যেমন পোশাক পড়ি একই পোশাক পড়ে কি আমরা রাস্তায় বেড় হই?
একজন পতিতাও বাইরে বের হতে শালীন পোশাক পড়েই বের হয়। রাস্তায় শুধু কিছু কিছু পাগল হয়ত পোশাক ছাড়া বের হতে দেখা যায় তবুও সব পাগলেই না। প্রচন্ড রোদে গরমেও একজন রিক্সা চালক, ভ্যান চালক খালি গায়ে বের হয় না।
কে কি ধরনের পোশাক পরবে সেটা তার নিজস্ব বিষয় তবে অবশ্যই শালিন হতে হবে। একজন পুরুষ মানুষ যদি উলঙ্গ হয়ে রাস্তায় বেড় হয় তার দিকেও সাধারণ জনগন তাকায় থাকবে। উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়ানো একজন উম্মাদের কাজ। শরীর ঢাকার জন্য যে পোশাক তা দিয়ে যদি শরীরটাই না ঢাকে তা কি করে পোশাকের আওতায় পড়ে,,, আর বোধগম্য নয়।
সাঁতার কাটতে নামার সময় আমরা যে পোশাক পরিধান করি সে পোশাক পড়ে কখনো কোন প্রোগামে নিশ্চয়ই যাব না। কোন অসুস্থ বা মৃত ব্যক্তিতে দেখতে নিশ্চয়ই বিয়েতে যাওয়ার মত জমকালো পোশাক পড়ব না। কতিপয় লোকের কাছে শোনা কথা বিতর্কিত শিক্ষার্থী ব্লাউজ পড়েছে যা দিয়ে শরীর ঢাকনি। যে ব্লাউজে তার শরীর ঢাকলো না সেটা পড়ার কোন দরকার ছিলনা ? কোথায় কি পোশাক পরতে হয় সবই কমনসেন্সের ব্যাপার। তা নির্ভর করে তার পরিবারিক মূল্যবোধের উপর। সে পরিবার থেকে যেমন শিক্ষা নিবে, তেমন শিক্ষাই সে পাবে। কোথায় কি ধরনের পোশাক পরতে হবে তা সে পরিবার থেকেই শিক্ষা পাবে। কাউকে হার্ট করার জন্য এই লেখাটি নয়। ভালো না লাগলে স্কীপ করবেন।
একদিন বাসে করে যাওয়ার এই পাগলিনীকে দেখে খুব মায়া লেগেছিল তাই ছবিটি তুলেছিলাম। পাগলীও পোশাক পরে আছে।