নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইসলামপুরে জয়তুননেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতা, নিয়োগ বাণিজ্য ও অবৈধভাবে গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠনসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক আমিনুুল ইসলাম স্কুলে যোগদান করার পর থেকেই ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যাপিঠটি হয়ে উঠেছে অনিয়ম-দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য। এসব দুর্নীতি অনিয়মের প্রতিবাদে স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে এলাকার সচেতন মানুষ দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের অপসারনে দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে। তারা সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও ঝাড়ূ মিছিলসহ নানামুখী কমর্সসূচী পালন করছে।
রবিবার স্কুল মাঠে এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচীতে অভিযোগ করা হয়। প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম যোগদান করেই শিক্ষার্থীদের বেতন দ্বিগুন করেন। তাছাড়া সরকারের দেয়া বিনামূল্যের বই বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করেন অতিরিক্ত টাকা। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পদ শুন্য দেখিয়ে সম্প্রতি গোপনে নিজের পছন্দের লোকজন নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটির বৈধ্যতা চ্যালেঞ্জ করে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জয়নাল আবেদীনসহ ১৪জন অভিভাবক সদস্য বাদী হয়ে জামালপুর সহকারি জজ আদালতে মামলা করেন।
অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক কোন কিছুর তোয়াক্তা না করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ৩য় ও চতুর্থ শ্রেণীর কয়েকজন কর্মচারি নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন করেছেন। সম্ভাব্য ওই তালিকার মধ্যে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের ছেলে ও ছেলের বউও রয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, স্কুলের পুরাতন টিনসেড ঘর প্রধান শিক্ষক রাতারাতি ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন। স্কুল প্রাঙ্গণের বেশ কয়েকটি পুরাতন মূল্যগাছ বন বিভাগের কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই প্রায় ২ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন।
স্কুলের বেশ কিছু জমি ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আঃ হাকিমের স্ত্রী সানোয়ারা বেগমের নামে দীর্ঘ মেয়াদি বন্দবস্ত দিয়ে এক লাখ টাকা স্কুল ফান্ডে জমা না করে তিনি পকেটস্থ করেন। এসব বিষয়ে স্কুলের জমি দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন প্রতিবাদ করলে ওই প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আঃ হাকিমকে বাদি বানিয়ে তার বিরুদ্ধে একাধিক মিথা মামলা দায়ের করেন।
স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, নিয়োগ বানিজ্যসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির কারণে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর রোষানলে পড়ার ভয়ে গত প্রায় তিন মাস ধরে প্রধান শিক্ষক স্কুলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এতে স্কুলের পাঠদানসহ সার্বিক কর্মকা- ব্যাহত হচ্ছে।
প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, স্কুলের লেখাপড়ায় বিঘœ ঘটানোর কারণে সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করেন।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরা মুস্তারি ইভা বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলন কর্মসূচির কথা শুনেছি। স্কুলের কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয় দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। তবে সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।